বই-ব্লগ। বাংলা বইয়ের দৈনিক ব্লগ। এই প্রয়াসে আমরা আপনার কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছি বাংলা বই ও পত্র-পত্রিকার খবর। নতুন ও সদ্য প্রকাশিত বই, পত্র-পত্রিকার খবরের পাশাপাশি থাকে আমাদের টিমের বাছাই করা কিছু বইয়ের খবর। আশা করি আপনার মত বইপ্রেমী মানুষের কাছে আমাদের এই প্রয়াস ভালোই লাগবে।
বইগুলির বিষয়বস্তুর সংক্ষিপ্ত বিবরণ তো এই ব্লগে থাকছেই, বইগুলি সম্পর্কে আরও বিশদে জানতে ( যেমন দাম ) ও অর্ডার করতে বইয়ের প্রচ্ছদে ক্লিক করুন। ওয়েবসাইটে আরও সমস্ত তথ্য বিশদে দেওয়া আছে। এছাড়া আর যেকোন জিজ্ঞাস্য থাকলে আমাদের সরাসরি Whatsapp করুন 7980991691 নম্বরে।
ডিটেকটিভ তারিণীচরণ । শ্রী কৌশিক মজুমদার
তারিণীচরণ রায় কলকাতার প্রথম বাঙালি প্রাইভেট ডিটেকটিভ। উনিশ শতকের শেষের দিকে কলকাতায় যখন এদিকে ওদিকে প্রাইভেট ডিটেকটিভ এজেন্সিগুলো গজিয়ে উঠতে থাকে, তাদের মধ্যে সবচেয়ে নাম করা ছিলেন ক্রিক রোডের জন ড্রিসকল সাহেব। সে যুগেই তাঁর ফি ছিল ষোলো টাকা। তারিণীচরণ কীভাবে যেন তাঁর অ্যাসিস্ট্যান্ট হয়ে গেছিলেন। ধীরে ধীরে কাজ শিখে ক্লাইভ স্ট্রিটে নিজেই চেম্বার কেনেন। নাম রে প্রাইভেট আই অ্যান্ড কোং। ডিটেকটিভ তারিণীচরণ উপন্যাস সন্দর্ভের চারখানি অত্যাশ্চর্য কাহিনির আরও একটি। এই চার কাহিনি পূর্বে অন্য যে কোন মাধ্যমে অপ্রকাশিত। গল্প এখানে সরলরৈখিক, নির্দিষ্ট চরিত্রদের উপর ফোকাস, আউটডোর এবং ক্লোজ ডোরের অনায়াস যাওয়া-আসা, ইম্পসিবল মিস্ট্রির অনবদ্য প্রয়োগ, হাতেধরে গোয়েন্দার নির্ণয় পাঠককে বোঝান এবং অতিসামান্য ইনফো ডাম্পিং। সব মিলিয়ে কাহিনি চারটি হয়ে উঠেছে খোলাতাই-তর, এবং স্পিন-অফের মেদবর্জিত।
ডাইনিবুড়ি ও অন্যান্য । অভীক সরকার
মনুষ্যত্বের পথচলা হল অন্ধকার থেকে আলোর দিকে যাত্রা, মৃত্যু হতে অমৃতের দিকে যাত্রা, ভ্রান্তি থেকে সত্যের দিকে যাত্রা। তন্ত্রও সেই একই কথা বলে। বলে দেহ থেকে দেহাতীতে যাওয়ার কথা। আর এই যাত্রাপথের গলিখুঁজিতে ওঁত পেতে থাকে কত না অগণন ছায়াশরীরের বুভুক্ষু আর্তনাদ। অন্ধ অভিশাপের সাতকাহন। আর সেই অন্ধকারের ছায়ার মধ্যে কেউ কেউ আসেন আলোর মাভৈঃ মন্ত্র নিয়ে। মন্ত্রকণ্ঠে বলেন, ‘জেনে রাখো অমৃতের সন্তান, এই পৃথিবীর সমস্ত পূজা, আরাধনা, মন্ত্রপাঠের থেকেও মহত্তর স্নেহ, দয়া, করুণা, মৈত্রী। কারণ ভালবাসাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় তন্ত্র, সবচেয়ে বড় যাদু।’ সেই ভয় আর ভালবাসার গল্প শোনাতে আবার ফিরে এসেছেন ভবতারণ চট্টোপাধ্যায় এবং স্বয়ং কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ।
তন্ত্রের ব্যবহারিক ইতিহাস-আদি থেকে অন্ত । সোমব্রত সরকার
তন্ত্র শব্দটির সঙ্গে যোগ, উপাসনা, আচার, বিধি – বিধানিক পদ্ধতি, ডাকিনী – যোগিনীবিদ্যা, চিকিৎসা, রান্না জুড়ে আছে। শ্বাস নেওয়া তন্ত্রের আগম, শ্বাস ছাড়া নিগম। শরীরের পাঁচ চক্রের শক্তিই সক্রিয় হয় পঞ্চমুণ্ডিতে, নয়টি চক্র যখন জেগে ওঠে, নবমুণ্ডির আসনে বসে সাধনা করেন সাধক। কর্ম ও জ্ঞানের চর্চা করতে করতে শ্মশান চক্র — সহস্রারে পৌঁছনোর উদ্দেশেই শ্মশান সাধনা। হোরাতন্ত্র, শব্দতন্ত্র প্রাচীন তন্ত্রের উল্লেখ্য দিক। ভারত জুড়ে তিনটি তান্ত্রিক সম্প্রদায়ের রীতিপ্রথা, আচার আলাদা ধরনের। সাত্বততন্ত্রে যাঁদের সিদ্ধি আছে, তাঁরাই বশীকরণ সিদ্ধ। প্রয়োগ চিন্তামণি, কৌশিকীতন্ত্র, রোহিণীতন্ত্র, ষষ্ঠীতন্ত্র, বরাহসংহিতা— চিকিৎসা, জ্যোতিষ, ভৈষজ্য বিধানের পুথি। মোহিনীতন্ত্র, হেব্রজতন্ত্রে রয়েছে চক্র ও কায়ালিপি। তন্ত্র ও তন্ত্রান্তর সংহিতার মান্যতা শ্রীকুলে। শৈব দার্শনিক সম্প্রদায় তিনভাগে বিভক্ত। আগম – কামিকাগম – শৈবাগম – রুদ্রাগম ছুঁয়ে আঠারো আগমের বিদ্যাক্রম। সেখান থেকে চৌষট্টি ভৈরবাগম — ভৈরবতন্ত্র, যামালতন্ত্র, মততন্ত্র, মঙ্গলতন্ত্র, চক্রতন্ত্র, বহুরূপতন্ত্র, শিখাতন্ত্র, মালিনীবিজয়োত্তরতন্ত্র, পাশুপত মত, কাপালিক সম্প্রদায়। শিবাচার থেকেই তন্ত্র। তন্ত্র কখনওই ধর্ম নয়, আচরণ মাত্র। আচারক্রমের একটি ব্যবহারিক প্রাচীন ইতিহাস রয়েছে। সমস্ত ভাব, আচার ও সাধন পরম্পরা নিয়েই রচিত — তন্ত্রের ব্যবহারিক ইতিহাস : আদি থেকে অন্ত।
ব্রতঠাকুরানির হাট । ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়
বাংলার প্রত্যন্তগ্রামের লৌকিক দেবদেবী, ভূতপ্রেত, অপদেবতা, উপদেবতা, আদিবাসীদের আরাধ্য দেবতা… এসব নিয়েই ব্রতঠাকুরানির পসরা। তথাকথিত যুক্তিবাদীদের প্রচলিত ধ্যানধারণায় দেবতা, লোকদেবতা, অপদেবতা এবং উপদেবতাদের এক ফুঁৎকারে উড়িয়ে দেওয়াই যায় হয়ত। কিন্তু তাহলে তো লোকসংস্কৃতির লোকায়ত ধ্যানধারণা নিয়ে বাকী সব চর্চাও তো মিথ্যে হয়ে যাবে। কিন্তু যুক্তিবাদীদের উপেক্ষা করেই ব্রতঠাকুরানির হাটের পসরা সাজানোর চেষ্টা। কেউ বলেন অপদেবতা নিয়ে বেশি চর্চার প্রয়োজন নেই। সমাজ পিছিয়ে পড়বে। কিন্তু সত্যিই কি তাই? রবিঠাকুর যে বলেছিলেন ‘দেশের লোক-সংস্কৃতির মধ্যে অতীত যুগের সংস্কৃতির এমন বহু নিদর্শনাদি সংগুপ্ত আছে যেগুলি আমাদের জাতির পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস রচনার মূল্যবান উপকরণ হতে পারে, ওই নিদর্শনগুলি গ্রামে গ্রামে ঘুরে ঘুরে সংগ্রহ করা প্রয়োজন।’ তেমন একগুচ্ছ অপদেবতার কথাও রইল বিশদে।
মেগাস্থেনীসের ভারতবিবরণ । শ্রীরজনীকান্ত গুহ দ্বারা অনুবাদিত
সভ্য ভারতে বাইরে থেকে দেশ ভ্রমণের জন্য যেসব বিদেশী পর্যটক আমাদের দেশে আসেন তাঁদের মধ্যে প্রথমদিকে আসেন গ্রীক পর্যটক মেগাস্থিনিস চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের আমলে। তিনি ভারতবর্ষ সম্পর্কে লেখেন দা ইন্ডিকা নামে গ্রীক ভাষায় বই যা দুষ্প্রাপ্য। তবে অনেক পরে নানা সময়ে তার অংশবিশেষ সংকলন করেন – যেমন এরিয়ান। তা থেকেই ল্যাটিন ও গ্রীকে একটি বই লেখা হয়। সেটি থেকেই সরাসরি বরিশাল কলেজের অধ্যক্ষ ইংরেজি, সংস্কৃত, গ্রীক, লাতিন, ফরাসী ভাষায় পন্ডিত রজনীকান্ত গুহ বাংলায় অনুবাদ করেন।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা কালে এই দুষ্প্রাপ্য গ্রন্থের সম্পাদনা করেন শ্রী বারিদবরণ ঘোষ।
ল্যাটিন ভাষায় লিখিত ভূমিকা সহ মূল গ্রীক হতে অনুবাদ করেছেন শ্রী রজনীকান্ত গুহ।
লাদাখের রহস্যময় গুম্ফা । হোমাগ্নি ঘোষ
লাদাখকে বলে হারানো সাম্রাজ্যের গুপ্তধন। সেই গুপ্তধনের সন্ধানে সারা পৃথিবী থেকে মানুষ ছুটে আসে অনাবিল আনন্দ ও অনন্য তাভিজ্ঞতার সাক্ষী হতে। লাদাখের অসাধারণ ভূ-প্রকৃতি, সেখানকার মানুষজন, সংস্কৃতি, তাদের ভাষা, তাদের দেবদেবী, ধর্মীয় আচার-আচরণ, স্থাপত্য মুগ্ধতার আবেশে ডুবিয়ে দেয়। রয়েছে অসংখ্য অজানা কাহিনী, রূপকথা, অলৌকিক গল্পগুজবে মেশানো রহস্যময় বৌদ্ধ গুম্ফা।